ভর্তিযুদ্ধ ও তদবির বন্ধে দেশের সরকারি-বেসরকারি সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা, দীপু মনি। রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা অ্যাকাডেমি (নায়েম) মিলনায়তনে ডিজিটাল লটারি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।
এ দিন বিকালে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তির কেন্দ্রীয় লটারি অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী। এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর সরকারি মাধ্যমিকে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী বাছাইয়ে ডিজিটাল লটরি অনুষ্ঠত হয়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ভর্তির ক্ষেত্রে আগে আমরা যা দেখতাম, সেটা ভর্তিযুদ্ধ, ভর্তি নিয়ে বাবা-মায়ের যে যুদ্ধ। ছোট ছোট শিক্ষার্থী যারা ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হবে, তাদের জোর করে মুখস্ত করাচ্ছেন, বাবা-মা নিজেরাও মুখস্ত করছেন। এই রকম একটা ভর্তিযুদ্ধের অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। যেসব নেতিবাচক চর্চাগুলো রয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে ইতিবাচক দিকে আসতে চাইছি। আমরা একটি মানের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। সব চেয়ে বেশি নম্বর পাওয়া মেধাবী শিক্ষার্থী সব একই স্কুলে। তার চেয়ে সেখানে নানা ধরনের মেধার শিক্ষার্থী একসঙ্গে থাকবে।’
দীপুমনি বলেন, ‘বিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধ তো হয়ই, আমাদের ওপরও যুদ্ধ চলে আসে। সবকিছুতে বেশি নম্বর পেয়ে যদি স্কুলে ভর্তি হতে হয়, তাহলে স্কুলের কৃতিত্বটা কী? কম নম্বর পাওয়া একজন শিক্ষার্থীকে পড়িয়ে সে বেশি নম্বর পেলে শিক্ষকের কৃতিত্ব। তাছাড়া বেশি নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীকে পড়িয়ে বেশি নম্বর পাচ্ছে, তাতে শিক্ষকের আত্মতৃপ্তির জায়গা থাকে না।’
ভর্তির যুদ্ধ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিশুদের ওপর প্রচণ্ড মানসিক চাপ থাকে। একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হয়। এর মধ্যে একটি অনৈতিক বিষয়ও জড়িয়ে যায়। অনেক রকম তদবিরের চাপ থাকে। পুরোটা এই নেতিবাচক চর্চা, সেটা দূর করার জন্য আগে থেকেই ভাবছিলাম। কী করে এ থেকে উত্তরণ করবো। ঠিক সেই সময় এসে গেলো করোনা। করোনা না আসলেও আমরা লটারির কথা ভেবেছি। গত বছর লটারি করার পর অধিকাংশ জায়গা থেকে ফোন এসেছে। দু’চারটি জায়গা ছাড়া সবাই এতে খুশি। এতে সমতা তৈরির সুযোগ তৈরি হয়েছে। ভর্তি ও কোচিং বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এটা যেহেতু চালু হয়েছে, প্রতিবছরই এটা থাকবে। গত বছর করা হয়েছিল মহানগরে। এবার জেলা পর্যায়ে লটারি করা হয়েছে। উপজেলাগুলো লটারির আওতায় আনিনি। আগামীতে সবপ্রতিষ্ঠান লটারির আওতায় আসবে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বাঁচানো, শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিবাচক একটি পরির্তন আনা, প্রতিষ্ঠানগুলোতে মেধার সমতা সৃষ্টি, অভিভাবকদের ভর্তি নিয়ে অসস্তি বন্ধ, শিক্ষার্থীদের ওপরে চাপ কমে যাওয়া, ভর্তি ও কোচিং বাণিজ্য বন্ধ হওয়া, অনাকাঙ্ক্ষিত তদবির বন্ধ হবে বলে আমরা মনে করি। ’
Customized By Design Host BD