1. motiarbtv@gmail.com : admin :
  2. superadmin@dainikmirpur.com : admin-1 :

২০২৮ সালের আগে কাটছে না বিদ্যুৎ সরবরাহের দুর্বলতা

দৈনিক আলো রিপোর্ট:
  • প্রকাশ : শনিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৭৫০ বার পড়া হয়েছে

উৎপাদন সক্ষমতা রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছলেও সঞ্চালন ব্যবস্থায় দুর্বলতায় দেশে এখনো নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। যদিও সঞ্চালন লাইনের দুর্বলতা কাটাতে গত এক দশকে ৫৪টি প্রকল্প গ্রহণ করেছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। এর মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে ২৫টি। চলমান রয়েছে ২১টি প্রকল্পের কাজ। আরো আটটি প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করছে সংস্থাটি, যেগুলোর মেয়াদ শেষ হবে ২০২৮ সাল নাগাদ। চলমান ও পরিকল্পনাধীন প্রকল্পগুলো শেষ হলে দেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের দুর্বলতা কাটবে বলে সম্প্রতি জাতীয় সংসদের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

সঞ্চালন লাইনের দুর্বলতা কাটাতে নেয়া প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা উল্লেখ করে কমিটির কাছে প্রতিবেদন দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এতে বলা হয়, প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ ও সঞ্চালন লাইন নির্মাণের রাইট অব ওয়ে প্রাপ্তিসহ সামগ্রিক প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির কারণে সঞ্চালন প্রক্রিয়ায় কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পিজিসিবি এসব সীমাবদ্ধতা দূর করতে অন্তর্বর্তীকালীন কার্যক্রম এবং স্থায়ীভাবে দূর করতে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

প্রতিবেদনে ময়মনসিংহ, রংপুর ও বরিশাল জোনের বিদ্যুৎ সরবরাহে সীমাবদ্ধতার কথাও তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ময়মনসিংহ, ভালুকা ও নেত্রকোনা ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রের লো-ভোল্টেজজনিত সমস্যা রয়েছে। চলতি বছর গ্রীষ্মকালীন পিক আওয়ারে কখনো কখনো সম্মিলিতভাবে সর্বোচ্চ ৩০-৪০ মেগাওয়াট লোডশেড করতে হয়েছে।

সরবরাহ সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে পিজিসিবির নেয়া বেশকিছু উদ্যোগ তুলে ধরে বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, জিটুজি প্রকল্পের আওতায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ ১৩২ কেভি ডাবল সার্কিট লাইনের ক্ষমতা বাড়ানোর কার্যক্রম নেয়া হয়েছে। এ অবকাঠামো নির্মিত হলে ভবিষ্যতে লোডশেডের প্রয়োজন হবে না। এছাড়া লো-ভোল্টেজ সমস্যা নিরসনে পিজিসিবির নিজস্ব অর্থায়নে ময়মনসিংহ, ভালুকা, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ১৩২/৩৩ কেভি উপকেন্দ্রে ক্যাপাসিটর ব্যাংক স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। এ কাজ শেষ হবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এছাড়া ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ কালিয়াকৈর-শম্ভুগঞ্জ ৪০০ কেভি লাইন এবং শম্ভুগঞ্জ ৪০০/১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র নির্মাণে মাঠ পর্যায়ের কাজ চলমান রয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে। আর শ্রীপুর ২৩০/৩৩ কেভি উপকেন্দ্র ও শ্রীপুর-ভালুকা ১৩২ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ শেষ হবে ২০২২ সালের মার্চে।

এদিকে রংপুর জোনের রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, জলঢাকা ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রগুলোর লো-ভোল্টেজজনিত সমস্যা রয়েছে। এজন্য এসব গ্রিড উপকেন্দ্রে পিক আওয়ারে সম্মিলিতভাবে ৪০-৬০ মেগাওয়াট লোডশেডের প্রয়োজন হয়। কয়লার ঘাটতির কারণে ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বড়পুকুরিয়ায় ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। আবার ২০২১ সালের মধ্যে ঠাকুরগাঁওয়ে ১১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হওয়ার সময় নির্ধারিত থাকলেও সেটি এখনো চালু হয়নি। এ জোনের সমস্যা কাটাতে পিজিসিবি বেশকিছু উদ্যোগও নিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। লো-ভোল্টেজজনিত সমস্যা সমাধানে পঞ্চগড়ে ১২ দশমিক ৫ মেগা-ভার ও ২২ দশমিক ৫ মেগা-ভার, কুড়িগ্রামে ২২ দশমিক ৫ মেগা-ভার এবং পূর্ব সাদীপুরে ২২ দশমিক ৫ মেগা-ভার ক্ষমতার ক্যাপাসিটর ব্যাংক স্থাপন করা হয়েছে। পূর্ব সাদীপুর ২৩০/১৩২ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র এবং বড়পুকুরিয়া-পূর্ব সাদীপুর ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ হবে ২০২৩ সাল নাগাদ। এছাড়া পার্বতীপুর ২৩০ কেভি সুইচিং স্টেশন, রংপুর ২৩০/১৩২ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র এবং বড়পুকুরিয়া-রংপুর ২৩০ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ ২০২৩ সালের শুরুতে শেষ হবে। আর বগুড়া-পার্বতীপুর ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইনটি ২০২৪ সালের জুনে শেষ হবে। এসব প্রকল্প শেষ হলে রংপুর বিভাগে বিদ্যুৎ সরবরাহে নিরবচ্ছিন্নতা বাড়বে।

বরিশাল জোনে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২৩০/৩৩ কেভি ট্রান্সফরমারের ক্ষমতা চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত। এজন্য ভোলায় ১২০/১৪০ এমভিএ ট্রান্সফরমার স্থাপনের কাজ চলতি বছরের মধ্যে শেষ হবে। ভোলা ও চরফ্যাশনে দুটি গ্রিড উপকেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ২০২৪ সালে এ কাজ শেষ হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে আশা করা যায়, ২০২৪ সাল নাগাদ সঞ্চালন লাইনের সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে। ফলে বিতরণ ব্যবস্থার অনেকখানিই উন্নতি হবে। তবে ভালোর তো শেষ নেই। এজন্য বিতরণ লাইন মেরামতসহ আরো ভালো সেবা দিতে নতুন নতুন প্রকল্প নেয়া হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
আরো পড়ুন
© All rights reserved © dainikmirpur.com

Customized By Design Host BD